অধিক সময় প্রস্রাব আটকে রাখার কুফল

দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাব আটকে রাখলে পাকস্থলীতেও সংক্রমণ হতে পারে। আপনি যখন কোন মিটিং-এ থাকেন অথবা কোন গুরুত্বপূর্ণ ইমেইল পড়তে থাকেন তখন প্রাকৃতিক ডাকে সারা দেয়াটা আপনার কাছে কম গুরুত্বপূর্ণ হয়ে যায়। এছাড়াও আপনি হয়তো অফিসের টয়লেট ব্যবহার করতে অস্বস্তি বোধ করেন। বিশেষজ্ঞদের মতে আপনার কিডনির যত্ন নেয়ার অর্থই হচ্ছে আপনি কখন বিপদজনক বলয়ে প্রবেশ করছেন তা বুঝতে পারা।
মূত্রথলি গড়ে ১৫ আউন্স তরল ধরে রাখতে সক্ষম। দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাব আটকে রাখলে তা আপনার মূত্রথলিকে প্রসারিত করে। যখন মূত্রথলি পরিপূর্ণ হয়ে যায় তখন সে মস্তিস্কে সংকেত পাঠায়, এটি মূত্রাশয়ের স্বয়ংক্রিয় প্রতিক্রিয়া। যার কারণে আপনি নিকটস্থ টয়লেটে যাওয়ার তাড়না অনুভব করেন। কিন্তু আপনি যদি প্রায়ই প্রস্রাব করা থেকে নিজেকে বিরত রাখেন তাহলে কখন আপনার প্রস্রাব করা প্রয়োজন তা জানার ক্ষমতা হারাতে পারেন আপনি- কথাটি বিশেষজ্ঞদের মতামত।
কিডনি বিশেষজ্ঞরা বলেন, আপনি দীর্ঘ সময় ধরে প্রস্রাব আটকে রাখলে আপনার মূত্রথলটি হতে পারে ব্যাকটেরিয়ার প্রজনন ক্ষেত্র। এই ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ তৈরি করতে পারে, যা কিডনিতে ছড়িয়ে পড়লে শরীরের অনেক ক্ষতি হতে পারে।
যদিও প্রস্রাব করতে যাওয়ার সময় বের করাটা অনেক সময়ই বেশ কঠিন হয়ে যায়। টরন্টো জেনারেল হাসপাতালের ইউরোলজিস্ট ডা.মাইকেল রবিনেট এর মতে, স্কুল শিক্ষক এবং ক্রেন অপারেটর এই দুটি পেশার মানুষদের অন্য পেশার মানুষদের তুলনায় ওয়াশরুম ব্যবহার করতে দেখা যায় কম। ‘নারীরা পরিচ্ছন্নতার উদ্বেগের কারণে প্রস্রাব আটকে রাখেন বেশি একজন মানুষের ‘স্বাভাবিক প্রস্রাবের হার দিনে ৮-১০ বার’।

দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাব আটকে রাখার ফলে যে স্বাস্থ্যসমস্যাগুলো হতে পারে :

  • মূত্রনালির সংক্রমণ: সাধারণত ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের কারণে হয়ে থাকে মূত্রনালির সংক্রমণ বা ইউটিআই। ইউটিআই হলে সংক্রমণ কিডনিতেও ছড়িয়ে যেতে পারে। এর ফলে প্রস্রাবের সাথে রক্ত যাওয়া, নিম্নমাত্রার জ্বর থাকা ও প্রস্রাবের প্রচণ্ড বেগ আসলেও প্রস্রাব খুব কম হওয়া ইত্যাদি উপসর্গ দেখা যায়। এক্ষেত্রে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
  • প্রস্রাবের সময় ব্যথা করা : দীর্ঘসময় ধরে প্রস্রাব আটকে রাখার ফলে প্রস্রাবের সময় তীব্র ব্যথা হতে পারে।
  • জ্বর: দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাব আটকে রাখলে প্রস্রাবে উপস্থিত ব্যাকটেরিয়া শরীর থেকে বের হতে পারেনা। এর ফলশ্রুতিতে জ্বর আসতে পারে।
  • মূত্রাশয় ফুলে যাওয়া এবং ক্যান্সার: আপনি যখন পানি পান করেন তখন মূত্রাশয় আস্তে আস্তে পরিপূর্ণ হতে থাকে। তাই যখন এই পানি মূত্র হিসেবে শরীর থেকে বের হয়ে না যায় তখন মূত্রথলি ফুলে যায়। এর চিকিৎসা করা না হলে মূত্রাশয় ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে।
  • কিডনি পাথর: পানি কিডনিকে পরিষ্কার করে। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাব আটকে রাখার ফলে কিডনির উপর মারাত্মক প্রভাব পরে। এর ফলে কিডনিতে পাথর হতে পারে।
  • সিস্টাইটিস: সিস্টাইটিস একটি সংক্রমণজনিত সমস্যা যা মূত্রনালির চারপাশে হয়। এটি নারীদের একটি বড় সমস্যা, যার কারণে মূত্রাশয়ের চারপাশের প্রাচীরে প্রদাহ হয়।
  • তলপেটে ব্যথা: দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাব আটকে রাখলে তলপেটে তীব্র থেকে মাঝারি ধরণের ব্যথা হয়।
  • পাকস্থলীর সংক্রমণ: দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাব আটকে রাখলে শুধু তলপেটে ব্যথা হবে এমন নয়, এর ফলে পাকস্থলীতে সংক্রমণ হওয়ারও ঝুঁকি থাকে।

Array

Click to Chat
  • Call us: 01719810084
  • Scroll to Top